আমলকীর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

ভূমিকা

আমলকী (Phyllanthus emblica), যা আচার, মোরব্বা, শরবত ও ভেষজ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বাংলাদেশের অন্যতম সুপরিচিত ও পুষ্টিকর ফল। এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল হিসেবে পরিচিত, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।



আপনার খাদ্য তালিকায় ও দৈনন্দিন স্বাস্থ্যে এবং ত্বকের যত্নে আমলকি ব্যবহার করতে পারেন। 

সূচিপত্র

পুষ্টি উপাদান

  • প্রতি ১০০ গ্রাম আমলকীতে রয়েছে
  • ভিটামিন সি: ৪৬৩ মিলিগ্রাম (যা কমলার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি)
  • ফাইবার: ৩.৪ গ্রাম
  • শর্করা: ১৬.২ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: ২২ মিলিগ্রাম
  • লোহা: ৩.১ মিলিগ্রাম
  • থায়ামিন (B1): ০.০৩ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস: ২০ মিলিগ্রাম
  • ক্যারোটিন: ৯ মাইক্রোগ্রাম
এছাড়া, আমলকীতে রয়েছে এলাজিটানিন, পলিফেনলস ও পানিক্যাফোলিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।



স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা সর্দি, কাশি ও অন্যান্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
২. হজম শক্তি উন্নয়ন
আমলকীতে থাকা ফাইবার ও পেকটিন হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং ক্ষুধা বাড়ায়। 
৩. চুল ও ত্বকের যত্ন 
আমলকীর রস চুলের গোড়া শক্ত করে, চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন চর্মরোগ থেকে রক্ষা করে। 
৪. চোখের যত্ন
আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন ছানি পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
৫. হৃদরোগ প্রতিরোধ
আমলকী হৃদযন্ত্রের মাংসপেশিকে সবল করে, হৃদস্পন্দনের মাত্রা ঠিক রাখে এবং রক্তে ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়।
৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ 
আমলকীতে থাকা উপাদানগুলো ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

সতর্কতা

  • যদিও আমলকী পুষ্টিকর, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে
  • :অ্যালার্জি: কিছু মানুষের আমলকীর প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা চুলকানি বা ত্বকে র‍্যাশ সৃষ্টি করতে পারে।
  • অ্যাসিডিটি: অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে আমলকী খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

আমলকি কিভাবে খাবেন?

  • শরবত: আমলকীর রস মধু ও পানি মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খেতে পারেন।
  • গুঁড়া: আমলকীর গুঁড়া মধু বা মাখনের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • আচার: আমলকীর আচার হজমে সহায়ক।
  • তেল: আমলকীর তেল চুলের জন্য উপকারী।

উপসংহার

আমলকী একটি পুষ্টিকর ফল, যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। তবে, এর অপকারিতা এড়িয়ে চলতে পরিমাণমতো খাওয়া উচিত। সঠিকভাবে খেলে আমলকী আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্মার্ট ইনফো ডেস্কের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টের রিভিউ করা হয়। নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url